অদ্ভুত অসুস্থতায় আক্রান্ত পৃথিবী। যার নাম 'ধর্ম' (Religion)। মানুষ হয়ে মানুষকে ঘৃণা করার, হত্যা করার, ধ্বংস করার এক মস্তিষ্ক বিকৃতির মহামারী। সহস্রাব্দ থেকে সহস্রাব্দ কেটে গেল, আবিষ্কৃত হলো না কোন প্রতিশোধক কিংবা প্রতিরোধক। প্রতিদিন আমাদের জন্ম কলুষিত। প্রতিদিন আমাদের পরিচয় লুন্ঠিত। প্রতিদিন আমাদের মৃত্যু বৃথা।
Sunday, October 31, 2021
Thursday, October 28, 2021
যখন দেয়াল চেপে আসে চারপাশ থেকে
বলি,
বন্ধ করো দুচোখ
এই বুকে মাথা রেখে দেখো কেমন ওম এখনো
পৃথিবী তো নতুন কোন ধ্বংসস্তুপ নয়
দাম্ভিক মানুষের পায়ের নিচে তো চিরকালই দাম্ভিক মানুষের ফসিল
আকাশের নিচে মাটির খুব কাছে
ঘাসের ওপর কোমল কান্না মাড়িয়ে চলে যায় দ্বিধাহীন সময়
সবাই বলে
পাপ ফিরে ফিরে আসে পাপীর কাছে
পূণ্য ফিরে ফিরে আসে পূণ্যাত্মার কাছে
কোন পৃথিবীতে?
কোন স্বর্গে?
কোন নরকেই বা?
ইথারে নাকি সঞ্চিত থাকে সব শব্দ
আর নৈশব্দ?
মসজিদ মন্দির গীর্জায় প্রতিদিন তুমুল শোরগোল
মাজারে মাজারে ঝলমল চাদর জিকির মাতম
দরবেশের ঘূর্ণিতে মাতাল দৃষ্টির সীমা
উন্মত্ত মানুষের আত্মা যতো আছড়ে পড়ে মুক্তির আশায়
ততোই জড়ায় মোহময় শৃঙ্খলে
ক্রম হ্রাসমাণ স্থান ও সময় দেয়ালের অগ্রসরে
কৃষ্ণ নয়, যিশু নয়, মোহাম্মদ নয়, বুদ্ধের প্রতিকৃতি নয় কোন
অপরুপ মিথ্যা, লোভ ও ঔদ্ধত্বে
আকাশ ছুঁয়ে শুধু অতৃপ্ত আত্মার প্রতাপ
সত্য নেই
তৃপ্তি নেই
মানুষের পায়ের নিচে শুধু মানুষের পর্বত
Thursday, October 21, 2021
টুকরো কথা : হায় আমার 'বাংলাদেশ'
একজন ইকবাল নামের তথাকথিত মাদকাসক্ত কিংবা ভবঘুরে কিংবা পাগল মুসলমান গভীর রাতে হিন্দুদের দূর্গাপূজা উৎসব উপলক্ষে নির্মিত কুমিল্লার এক পূজামন্ডপে এক মূর্তির পায়ের ওপর কোরান শরিফ রেখে এলো। তৌহিদী জনতা ভাবলো হিন্দুরা কোরান অবমাননা করেছে। তারপর সারা দেশে পূজামন্ডপগুলোতে মারধোর ভাঙচুর জ্বালাও পোড়াও শুরু হলো। হিন্দদের ঘরে ঘরে আক্রমণ শুরু হলো। ধর্ষণ, নির্যাতন, লুটপাট চললো। মন্দিরে মন্দিরে আক্রমণ হলো। শান্তিময় আশ্রমে ধ্বংসযজ্ঞ চললো। খুন খারাবি হলো। পুরহিতের লাশ ভেসে উঠলো। পীরগঞ্জের মাঝিপাড়া পুড়ে ছাই হলো। সারা দেশের দূর্গোৎসব পন্ড হলো। দেশের সমস্ত সংখ্যালঘু এবং মানবিকতাসম্পন্ন মানুষের হৃদয়ের বিশ্বাস, আস্থা গুঁড়িয়ে গেল। পৃথিবীর কাছে বাংলাদেশের সম্মান নষ্ট হলো। এমনই তো ঘটনাটা, তাই না? সব কিছুর মূলে তো ওই 'তৌহিদী জনতার একটা বোঝার ভুল'।
তা সেই ভুল শোধরানোর চেষ্টা চলছে। সরকার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনি চেষ্টা করছে। সেই তথাকথিত মাদকাসক্ত কিংবা ভবঘুরে কিংবা পাগল ইকবালকে (যে কি না এখন আবার পলাতক) ধরার প্রচেষ্টা চলছে। আমাদের প্রত্যেক সরকারমন্ডলির চেষ্টার কোন শেষ নেই। তারা সম্প্রীতির পথে চেষ্টা করে যাচ্ছেন গত পঁয়তাল্লিশ বছর ধরে। সংখ্যাগরিষ্ঠদের ধর্মীয় নেতাদের এবং তাদের অনুসারী ও যোদ্ধাদের সম্মান, ক্ষমতা, সুযোগসুবিধা, বাকস্বাধীনতা, অবমাননার স্বাধীনতা, জোটস্বাধীনতা, সাইবারস্বাধীনতা, আইন হাতে নেবার স্বাধীনতা, অসম্মান করার স্বাধীনতা, ফতোয়া দেবার স্বাধীনতা, বলাৎকার করার স্বাধীনতা, ভুল বোঝার, ভুল করার স্বাধীনতা, ষড়যন্ত্রের স্বাধীনতা, জঙ্গীবাদ চর্চার স্বাধীনতা, টাকা ধোয়ার স্বাধীনতা, জমি, সম্পদ, তেল, মাখন ইত্যাদি ইত্যাদি দিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। চেষ্টা তো করতেই হবে, বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ধর্ম যে "ইসলাম", আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার সিংহভাগই যে আসে ইসলামী বিশ্ব থেকে, তা সে যত শ্রম শোষণের মাধ্যমেই হোক না কেন। সরকারের চেষ্টাকে সাধুবাদ জানাই। ইসলামী ও জিহাদি বিশ্বের সাথে সম্মানের, মানবিকতার, সুশিক্ষার, সুনীতির, সুশাসনের, সুবিচারের, যুক্তি ও বিবেকের মূল্যে সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য, অর্থনীতির চাকা চঞ্চল রাখার জন্য। আমরা মধ্যম আয়ের দেশ হয়েছি, একদিন উচ্চ আয়ের দেশ হবো। হিসাবে আর হাতে টাকা থাকলে এই ভোগবাদী মানুষের পৃথিবীতে কেউ তো আর অশিক্ষা, কুশিক্ষা, নীচতা, অসভ্যতা, বর্বরতা বা চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন করে না। তবে হ্যাঁ, 'বাংলাদেশ' নামটা যদি পাল্টে ফেলতে পারতেন তবে কৃতজ্ঞ হতাম। কারন 'বাংলাদেশ' শব্দটার সাথে এতো সংগ্রাম, এতো আত্মত্যাগ, এতো নিরপেক্ষতা, এতো সমতা, এতো লোভহীনতা, এতো সততা জড়িয়ে আছে, 'বাংলাদেশ' শব্দটার সাথে যখন বর্বর, অসভ্য, মৌলবাদী, উগ্র এই শব্দগুলো জুড়ে দেয়া হয়, 'বাংলাদেশ'কে পাকিস্তান কিংবা আফগানিস্তানের সাথে তুলনা করা হয়, আমাদের মতো সাধারন বাংলাদেশীদের মরে যেতে ইচ্ছা করে, মরমে মরেও যাই সত্যি বলতে গেলে। অবশ্য আমরা মরে গেলে কার কি ই বা এসে যায়...
আমার ভালো লাগা
সন্ধ্যের আলো বেদনা জাগায়
ব্যস্ততম দিন অস্তে যায়
তুমি পাশে থাকো যতক্ষণ
আমার ভালো লাগা
প্রতিটি দিন যেন ঘোর
বেদনাতে রাগে তোমার ছোঁয়া
নিয়ত খোঁজে অবুঝ এ মন
আমার ভালো লাগা
এক হাজার বছর কেটেছে
আমাদের স্বপ্ন স্নাত হয়েছে
তোমারই হাত ধরি আবার
বেদনাকে ধুয়ে মুছে দিই দূরে
হোক আকাশ ধুসর কিংবা নীল
পৃথিবীটা রঙিণ স্বপ্নীল
তুমি পাশে থাকো যতক্ষণ
আমার ভালো লাগা
(Translated from "My Happyness" of Ella Fitzgerald)
RainCall
Its been long I've lost my peace of mind
But when it rains
Still I can take a moment
Listening to the rain brings back all the colors wet n hazy n harmonic
Something beyond all scars n fears
Honest enough to ask myself for something or someone...
I brought myself carefree
In my teen I gathered courage to free my soul
All those days n evenings under the rainfall
Showered my every insecurity n every emptiness
Water n mud, trees n grasses, clouds n thunderstorms
They embraced me like one of them
Skin on skin forever
Still I sense the smell of rain in my skin n breath
Like rain never left me
I've come along far away...
Here night is deepening
Rain n thunderstorms r in my ear
like calling for thousand years
To embrace again
To hold my damp palms n fingers in adorance
To listen to my laughter loud n
To smile back to me
To wipe my tears n
To cry for me
To absorb my scream n
To scream out me
To greet my kiss n
To kiss me back
To hear my unspoken whispers n
To whisper back in my lips
To sing n dance with me
To live n die with me again n again
To take me as own, inseparable one,
Sensitive n wet, inside n out...
https://youtu.be/rtOvBOTyX00
Wednesday, October 20, 2021
I'm walking with ma shadow
She's taking me to ma dead end
Glasses n water under our feet though
She's walking all ma senses
M rolling a stone over n over
She hold a stone all made of shadow
We scramble as we born for this
M rolling a stone
Never been big enough to fill the void inside me
Its me n her since we decolonized our souls
So we walk n scramble for some sanity
So we walk n scramble to let go
Ma shadow, she thinks six feet above n under
She walks me to infinity
Tuesday, October 19, 2021
বিছানায় নীল আলোকনারা নীল নীল পরী হয়ে গান গায়
মৃদু হাসে আবার অভিমানেও গাল ফোলায়
দেখে দেখে রাত ফুরোয়
ফুরিয়ে যায় পর্দার ওপারে সকালের নরমটুকুও
হাড় মাংসের শরীর জুড়োতে জুড়োতেও জুড়ায় না
ক্লান্ত দুচোখ ঘুমোতে ঘুমোতেও ঘুমায় না
কবিতারা চিরনিদ্রা যায় বইঘরে
নিয়ম করে গলা সাধার দিন পড়ে থাকে নিষিদ্ধ শহরে
আর ভালোবাসার শবদেহ সেই তো কবে গেছে ভাসানে
ভাবি
বেহুলার মতো আশা নিয়ে যারা বাঁচে তাদেরও কি জোটে প্রেম?
নাকি প্রপঞ্চক সময়ে সমগ্র জীবন কেবলই নাছোড় শবযাত্রা?
বিছানায় নীল আলোয় কঙ্কালদের সাজানো গোছানো সংসার পাতা
শব্দহীন উইপোকারা গোগ্রাসে গিলে নিচ্ছে উষ্ণতার শেষটুকুও
সবকিছু ক্ষয়ে যায় উবে যায় শেষে উপেক্ষিত সত্যের মতো
পরীদের গানে তবু ফুটে ওঠে অপার বিস্ময়
Monday, October 18, 2021
নিঃশব্দতার গান : তিন
চোখ বুঁজে দেখি এক অনন্য ঘোরে
বৃদ্ধ বিবস হয়েছো তুমি
স্থির ধুসর ছায়াটিও ক্লান্ত হয়েছে দেয়ালের ওপর
অস্ফুট হাসিটুকু ফুটে ওঠে কোঁচকানো ঠোঁটে তোমার
চোখের কোণে অশ্রুবিন্দুও ওঠে ফুটে
আবছা ও প্রকট সমস্ত স্মৃতির কোলাহলে
গ্রহণ করেছো কারো অব্যক্ত ভালোবাসা
নিঃশব্দে...
Sunday, October 17, 2021
Orgy Kings n Queens
They talk out of their ass
They think shit in their ass
They hold some pain in their ass
Yes they can hold some pain in their ass
As long as
They can sit on the chair of gold
Their mouths are shut
Coz their throats are filled with shafts of fear n money n power
Yeah yeah
Fear n money n power
No matter what
They ride on the chair
Made of gold
Yeah yeah as long as
They ride on the chair
Saturday, October 16, 2021
টুকরো কথা : বিশ্বাস
সেই কোন শৈশবে দুর্গাপূজা দেখতে গিয়েছিলাম প্রথম মনে করতে পারবো না ঠিক। বাবা নিয়ে গিয়েছিল আমাদের ভাইবোনদের। আজো দুর্গাপুজা এলে সেই প্রথমবারের দুর্গাদর্শণই চোখে ভেসে ওঠে। সেই সুডৌল দশ হাতের দুর্গা, তিনটে চোখ, লাল টকটকে শাড়ি, ইয়া বড় হাঁ করা সিংহ, অনেক আলো, অনেক মানুষ, অনেক শব্দ তালের আবার আনেক শব্দ তালের নয়, হৈহৈ রৈরৈ, ধোঁয়া, অদ্ভুত সব গন্ধ, ধুপের, কর্পুরের, ফুলের, মানুষের... সব মিলিয়ে অচেনা অদ্ভুত এক জগত যেন। ছোট্ট আমি বাবাকে আরও জোরে চেপে ধরেছিলাম হারিয়ে যাবার ভয়ে। হৈ হট্টোগোল পেরিয়ে তারপর গিয়েছিলাম বাবার সবচেয়ে কাছের বন্ধুর বাড়ি। বাড়ি নয়, সে ছিল এক ছোট্ট ব্যাড়ার ঘর, গ্রামে যেমন থাকে তেমন। সে ঘর গ্রামে নয়, ছিল শহরের ঠিক হৃদয়েই। প্রায় অন্ধকার সে ঘরের এক কোণে ছিল এক দাদু, সাদা ধবধবে শাড়িতে মোড়ানো। উনি ছিলেন বাবার আরেক মা ই, জেনেছি সব সময়, বাবার চরম দূঃসময়ে নাছোড় অভাবের মাঝেও ওই দাদুটাই নাকি পাশে দাঁড়িয়েছিল। জেনেছি ওরা সেই পুরো এলাকার জমিদার, দুষ্টু লোকেরা কেড়ে নিয়েছে, জবরদখল করেছে ওদের সবকিছু। পূজার মিষ্টি, ফল আর স্প্রাইট খেয়েছিলাম আমরা ওখানে। প্রতি বছরই যেতাম ওই মিষ্টি দাদুটার বাড়ি, তারপর বড় হতে হতে কখন থেকে যে আর যেতাম না তা মনে নেই। লক্ষ্মীপূজোতে যেতাম বাবার দুই সহকর্মীদের বাড়ি। এতো ঝকঝকে থাকতো ওদের মেঝে, ঘরদোর, আসবাব, জুতো খুলে চৌকাঠ পেরোতাম আমরা। কর্পুরের সুগন্ধি ভরা ঘরে তৈরী সন্দেশ, আরো কতো কি খেতে দিতো ওরা। আদরও পেতাম অনেক ওখানে গেলে। স্কুলে ভর্তি হবার পর প্রিয় বন্ধু হলো শুক্লা, অনেকটা আমার মতোই দেখতে, কালো গায়ের রঙ, সরু সরু হাত, ফোলা ফোলা গাল, টানা টানা চোখ, সিল্কি সিল্কি চুল, মনে হতো ওই আমার সত্যিকারের বোন যেন, প্রাণের বন্ধুও যেমন। কতো যে গল্প করতাম, খেলতাম দুজন একসাথে। স্কুলের ঠিক পেছনেই ছিল ওদের বাসা। শুক্লা সবসময় বলতো "চলো না, চলো আমার বাসায়।" একদিন সত্যি সত্যি চলেও গিয়েছিলাম। সিঁড়ি দিয়ে উঠলাম দোতলা বা তিনতলায় যেন, সিঁড়ি থেকে বাঁদিকে ওদের বাসার দরজাটা খোলাই ছিল। চৌকাঠ পেরিয়ে পা রাখার সাথে সাথেই শুক্লার মা হাঁ হাঁ চিৎকার করে বাড়ি মাথায় তুললো, আমি নাকি ওদের বাসা নোংরা করে দিয়েছি, এখন পুরো বাসা মুছতে হবে আবার। আমি আর শুক্লা দুজনেই ভয়ে কুঁকড়ে গেলাম। আমি আতঙ্কে একছুটে আবার স্কুলে ফিরে এলাম। খুব দূঃখ, খুব কষ্ট, খুব যন্ত্রণা আর খুব রাগ হয়েছিল সেদিন আমার, ভাবছিলাম, সবাই ঠিকই বলে "হিন্দুরা খুব খারাপ, ওরা সত্যিই খুব শয়তান"। শুক্লার সাথে বন্ধুত্ব নষ্ট হয়ে গেল আমার। হিন্দুদের প্রতি ঘৃণা হলো আমার। পাড়ার পাতি উচ্চিংড়ে ভাইয়েরা যখন কাগজ পোড়াতে পোড়াতে বলতে লাগলো "হিন্দুদের মন্দির পোড়াই, হিন্দুদের মন্দির পোড়াই", আমিও যোগ দিলাম ওদের সঙ্গে। কারন, হিন্দুরা খুব বাজে, ওরা বাবুরি মসজিদ ভেঙেছে, ওরা মুসলমানদের ঘেন্না করে। আমার বয়স তখন পাঁচ কি ছয়, কিংবা সাত, ঠিক মনে নেই।
আমি সেই ভাগ্যবানদের মধ্যে একজন, যার একজন প্রগতিশীল বাবা ছিল, সুশিক্ষা লাভের সুযোগ হয়েছিল, বিভিন্ন ধর্ম ও বিশ্বাসের বন্ধুবান্ধব তৈরী হয়েছিল, অসাম্প্রদায়িক ও আধুনিক পরিমন্ডলে জীবনযাপনেরও সুযোগ হয়েছিল। তাই হয়তো বড় হবার পর সাম্প্রদায়িক চিন্তা আর মাথা চাড়া দেবার চেষ্টা করেনি। পরবর্তীতে এক বেস্ট ফ্রেন্ডের মা যখন ক্ষেপে উঠেছিলেন আমাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব দেখে শুধুমাত্র আমি মুসলিম পরিবারের একজন বলে, তখনও না। আমি বুঝতে শিখেছিলাম ওই আন্টিটা সাম্প্রদায়িক চিন্তা করেন বলেই ক্ষেপে উঠেছেন, এ ওনার ব্যক্তিগত কুশিক্ষা এবং কূপমন্ডুকতা, এর সাথে আমাদের বন্ধুত্ব এবং আমার অসাম্প্রদায়িক চিন্তা ভাবনার কোন সমান্তরাল সম্পর্ক নেই। সবকিছু ছাপিয়ে মঞ্চে শিল্পময় মন্ত্রজপ যেমন করেছি, শাড়ি পরে কৈশোরের ওপারেও পা রেখেছি সরস্বতি পূজায়, কিংবা ঢাকের তালে নেচেছি উন্মাতাল কখনো, তেমনি সব ধর্মের বন্ধুদের সাথে ভাগ করে নিয়েছি ঈদের খুশি, শবই বরাতের আলো ও স্বাদ কিংবা মহররমের বিষাদ।
সময়ের অগ্র যাত্রায় আমিও পেরিয়েছি অনেকটা পথ। দৃশ্যমানে হয়তো নয়, অদৃশ্য মনটাকেই চেয়েছি এগিয়ে নিতে, এগিয়ে দিতে, সর্বক্ষণ। কোন ধর্মীয় আচার আর টানে না আমাকে। এক ধরনের স্মৃতিপ্রবণতার আবেগ আপ্লুত করে খানিকটা যদিও, অস্বিকার করবো না। কিন্তু ধর্মীয় আচারগুলোর মূলের ইতিহাস, সমাজ চিন্তা কিংবা বিশ্বাসের পশ্চাতপদতা পীড়িত করে আমাকে। যে ধর্ম ও আচার মানুষে মানুষে বিভেদ করে, নারীপুরুষের বৈষম্যতাকে যুক্তি দেবার প্রয়াস করে, লোভান্ধ করে, মোহান্ধ করে, সে ধর্মে, সে আচারে, সে বিচারে মন নেই আমার। নারীর শরীর ও জীবনযাপন নিয়ে কোন বিধি নিষেধের ঘোর বিরোধী যেমন আমি, নারীবাদী কিংবা মানবতাবাদী হবার জন্য দুর্গার মাঝে আমি নারীশক্তির রূপ দেখতে চাইনা, ভাবতে চাইনা নারীও দুর্গার প্রতিরূপ। মাদুর্গা আমার কাছে অন্য আর সব সুপারহিরোদের মতোই মানুষের অসামান্য কল্পনাশক্তির এক অনবদ্য সৃষ্টি। যেকোন নারীকে এবং যেকোন পুরুষকেও আমি খুব সহজ ও স্বাভাবিকভাবে শক্তিমান বলে স্বীকার করতে চাই, তার সমস্ত যোগ্যতা, অযোগ্যতা, সবলতা, দূর্বলতা, সফলতা, ব্যর্থতা কিংবা অনিশ্চয়তা নিয়েই।
এই সবই আমার নিজের একান্ত বিশ্বাসের এবং অভিজ্ঞতার পরিলেখা মাত্র। আশা করি কারো ধর্মানুভূতিতে আঘাত দিয়ে ফেলিনি, এমনটা আমি স্বপ্নেও করতে চাইনা। আমি যেমন আমার বিশ্বাস নিয়ে শান্তিপূর্ণ জীবন যাপন করতে চাই তেমনি চাই প্রত্যেকেই যেন যার যার বিশ্বাস অনুযায়ী জীবন যাপন এবং উদযাপন করতে পারে। হিংসা ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমরা যেন দাঁড়াতে পারি আমাদের সহজাত বিশ্বাস ও উপলব্ধি নিয়েই। নিজের কুশিক্ষা এবং কূপমন্ডুকতার বিরুদ্ধেও যেন দাঁড়াতে পারি নিজেরই নাজুক কোমল মানুষের হৃদয় নিয়ে।
জানি সেদিন খুব ছোট্ট ছিলাম, খুব রাগ হয়েছিল, রাগে অন্ধ হয়েছিলাম, শুক্লাকে ত্যাগ করেছিলাম। কিন্তু আজও ওর ছোট্ট মুখটা ভেসে ওঠে চোখের সামনে মাঝেমাঝে, ওখানে অনেক লজ্জ্বা ছিল, কান্না ছিল, ওর মায়ের ধর্মান্ধতা ওকে সেদিন খুব ছোট করে দিয়েছিল। শুক্লা এখন কোথায় আছে, কেমন আছে, কেমন হয়েছে দেখতে, কিচ্ছু জানিনা। পৃথিবীর সমস্ত বিভেদের, সমস্ত নীচতার অনেক ঊর্ধ্বে ছিল আমাদের বন্ধুত্ব। এটা যখন বুঝেছি তখন অনেক দেরী হয়ে গিয়েছিল হয়তো। আর যেন কোন মানুষের, কোন সমাজের, কোন রাষ্ট্রের দেরী না হয়। আমাদের দেরী হলে পিছিয়ে যায় পৃথিবী অন্ধকারে।
Wednesday, October 13, 2021
প্রেসক্রিপশান : এক
যদি কখনো খুব একলা লাগে
যদি কখনো মনে হয় বুকের ভেতর কেমন খালি খালি
কিংবা কেমন ব্যাথা ব্যাথা
মেরুদন্ডটাকে আর নিজের মনে না হয়
হাত পা জিভ ঠোঁট সব অসাড় হয়ে যায়
যদি বোঝেন একরাশ কাঁন্না গলায় আঁটকে গেছে
ঢোক গিলতেও কষ্ট হয়
স্নায়ুতন্ত্রে এক নিষ্ঠুর বিষাদগ্রস্ততা ছড়িয়ে পড়তে থাকে
যদি কিছুতেই ঘুম না আসে
যদি মনে হয় আলোতে চোখ ধাঁধিয়ে যাচ্ছে
যদি মনে হয় অন্ধকার গিলে নেবে এক্ষুনি
যদি মনে হয় দেয়াল চেপে আসছে চারদিক থেকে
যদি মনে হয় দেয়ালও ছেড়ে চলে যাচ্ছে দূরে
যদি মনে হয় দম আঁটকে আসছে
যদি মরবার মতো দমটুকুও না থাকে
ভাববেন না
আপনার দরকার একটি প্রমাণ সাইজের কোলবালিশ
কোলবালিশটাকে বুকে চেপে ধরুন
বুকের খালি খালি ব্যাথা ব্যাথা ভাবটা কমবে
একটু পর কান্নাটাও বেরিয়ে আসবে
স্নায়ুর সাথে সাথে মনটাও শান্ত হবে
শরীরে বল পিবেন ধীরে ধীরে
তারপর ঘুমিয়ে পড়ুন
ধীরে ধীরে...
Tuesday, October 12, 2021
নিঃশব্দতার গান : দুই
কেউ আলো জ্বেলেছিল ভুল করে
ভুল আলো
ভুল ঘরে
সে আলো ছড়ালো উত্তাপ
মরলো কতো পোকা
কতো রাত কতো সন্ধ্যা কতো সকাল
অন্ধ দুচোখ ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেয় সে আলো
ভুল সময়ে
ভুল করে
সবার অগোচরে দেয়ালে প্রিয়তম মুখ জ্বলজ্বল করে
কপাল চুইয়ে নামে নিঃশব্দতারা
ভাষাহীন পরিচয়হীন কামনার মতো
আলোটা টলমল করে ঘরময়
নিঃশব্দে
ভুল ঘরে
ভুল করে...
Monday, October 11, 2021
নিগম
ফিরে গেছে সে
হয়তো ভগ্ন হৃদয়ে
তা যাক
জুড়ে তো যায় চামড়া, হাড়গোড়
বৃদ্ধবয়সেও
হৃদয়,
সে তো নিতান্তই অপার্থিব কিছু এক
কিংবা মাথার ভেতর শুধুই এক অদ্ভুত অসজ্ঞায়িত বোধ
ফিরে গেছে সে
হয়তো চিরতরে
তা যাক
যা কিছু আলোয় আলোয় উজ্জ্বল
তাই তো জাগায় আশা
পোকাদের, পাখিদের, মানুষের, গাছেদেরও
এই গুঢ় অন্ধকারে
বেঁচে থাকে স্থানু অভিমান
তাকে মাড়িয়ে তো চলে যায় সবাই, সব, শবও,
সময়ের
ফিরে গেছে সে
হয়তো ছিলই না কোনদিন
তা হোক...
Sunday, October 10, 2021
নিঃশব্দতার গান
একদিন নিঃশব্দ হব
বহু উঁচুতে উড়ে চলা কোন এক পাখির ডানায় আঁটকে থাকবে দৃষ্টি
গোধূলির আলো স্থির হবে শেষে
সব গান সব অভিমান থামবে অবস পরমতায়
নিঃসহায় রয়ে যাবে জন্ম চিরকালের মতোই
Wednesday, October 6, 2021
রেলা : তিন
নিদ্রাহীনতার রাতে ঝনঝনে ঠনঠনে মাথা
হৃদয়ের ব্যাথা কিছুই নয়
দাঁতের ব্যাথা যখন মরন কামড় দেয়
কুলোর ঝাড়ায় প্রেম উজাড়
নিমগ্ন আত্মা দিন গোনে
এক দুই তিন চার পাঁচ...
হা ভোলানাথ
পারবে একবার মাথায় তুলে নাচতে আমায়?
কিংবা ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দিতে
পালকের মতো
সহস্র মণ ঘি পুড়ুক বা তেল
পড়ে থাকে তো সেই ছাই
শৈশবে সিলগালা, কৈশোরে নিষেধাজ্ঞা, যৌবনে গ্লানি
পাহাড় দেখতে গিয়েছিলাম
পাহাড়ও দেখলো আমাকে
তারকাঁটা বেঁধা হৃদয় নিয়ে ফিরেছি তারপর
ঘুম আসে না
মাথা ঠনঠন ঝনঝন করে
দাঁতে অসহ্য যন্ত্রণা
English Translation of Bangla Folk Song: Fakir Lalon Shah; চিরদিন পুষলাম এক অচিন পাখি; Forever I Nurtured a Mysterious Bird
Forever I Nurtured a Mysterious Bird Forever I nurtured a mysterious bird, which never discloses its identity. For this grief, my eyes ...
-
Back to the city again The city that never understood me The city that never healed my wounds Where I lost my love and screamed But I c...
-
মনের গোপন সে কথাটি মনের অতলেই থাকে দিন রাত যা থাকে চোখের পাতার নিচে বর্ণিত হবার নয় কোনো চিন্তায় রাগ বিরাগ অনুরাগ... অভিমান অভিযোগ নয় ...