কুয়াশার চাদরে ঢেকেছে শহর আর অসময়ে মেঘ করে আছে আজ
স্যাঁতস্যাঁতে দিনদুপুর সন্ধ্যা আর মজ্জা
হিম পড়বার আগে কোথাও মাঝসমুদ্রে বিষন্ন ঝড় উঠেছে হয়তো
অবুঝেরা
যারা নিষ্পাপ সঙ্গে মাঠের ধারে রাস্তায় দোকানে বসার ঘরে দুর্মূল্য আনন্দে সময় কাটাতো
স্বাধীনতার প্রথম আঁকিবুঁকি ছিল তাদের চঞ্চলতায় কৌতুহলী ধূম্রপানে
সুর আর কবিতারা অর্থময় ছিল আগ্রহী নিবিড় অনুভবে
দ্বিধাগ্রস্ত অজানা সম্পর্কের সমীকরণে তাদের অবুঝ বুকে জমে থাকে অভিমান
দৃষ্টিতে সত্য লিখে উষ্ণতার পিপাসা নিয়ে তারা সরে সরে যায় দূরে দূরে ভিন্নবিশ্বাসে ভিন্নরকম জীবনের বাস্তবতায়
ভবঘুরেরা
যারা হাঁটতো পুরো শহরময় আর বসে বসে দেখতো কাকেদের ভোজ, শহুরে পাগল, গড়িয়ে চলা দিন
রাত করে ফিরত বাড়ি ভবঘুরে, বাংলা মাতাল, নেশাখোর আর রাতপরীদের পাশ দিয়ে
বাতিহীন খুনেদের রাস্তায় তারা ছিল বিশ্বস্ত সহচর
তাদের এলোমেলো চুলে বাসা বাঁধে ডাইনি কুচুটে
বৃষ্টির ঠাণ্ডা ছাঁটে তাই জ্বলে যায় চামড়া
তাদের অস্থিতে রক্তক্ষরণ আর বিশ্বাসের সীমা ছাড়ায় প্রপঞ্চক অধিকারবোধ
শিকারীরা
যাদের বিবস হৃদয় নিয়ে দেখা হয়েছিল তারা ছিল নগ্ন শিকারী
চতুর্দিক ধোঁয়া করে তারা শিকার করত আবেগ দুঃখ জীবনবোধ
পরিত্যাক্ত শহরে তাদের ছোট্ট গুহায় ডুবে যেতো সংগীতে আর লুফে নিত উন্মাদনার শেষ বিন্দু
লোভ আর লালসার গন্ডি ছেড়ে ধেয়ে আসেনি প্রেম কোনোদিন
ভালোবাসা তাই পাপ হয়ে কেঁদে ফেরে মেঝেতে
অপেক্ষা আর নেশার প্রতিরোধ বেয়ে তারা হারিয়ে যায় ক্ষমাহীন জনসমুদ্রে
গৃহবাসীরা
যারা সূর্যাস্ত দেখতে দেখতে একাকিত্ব ভুলেছিল আর দারুণ সবুজ হবে বলে হেঁটেছিল পাহাড়ি পথ ধরে
ঝিঁঝিঁদের গান জোনাকিদের আলোর আশ্বাস নিয়ে প্রতিদিন ফিরে যেত স্বপ্নমগ্ন বিছানায়
দিনের শেষ চুম্বন মিশে থাকতো নিশ্বাসে
আঙুলে লেগে থাকত মমতা
তারা চার দেয়াল আর ছাদের নিচে অচেনা দৃশ্যপটে বেঁচে থাকে বিমূঢ় আগন্তুক হয়ে
যুগ পেরিয়ে যায় দূর্মতি সময় সমাজ উচ্চমূল্য আগ্রাসী হতাশা যুঝে যুঝে
আড়ষ্ট বর্তমানে ফেরেনা পাহাড়ি পথ
দিন কাটে সংজ্ঞাহীণ চতুষ্কোণে
মেঘ আর কুয়াশা কেটে রদ্দুর ফিরবে জানি অলকানন্দা বাগানবিলাসের কাছে
ছেঁটে দেয়া গোলাপের ডালে উঁকি দেয় নতুন সবুজ
বইঘরে শোবারঘরে ক্লান্তিকর মহামারী
আঙুলে সন্ত্রস্ত শব্দ সংগীত
মন বলে তবু বাঁধতেই হবে নতুন গান
No comments:
Post a Comment