শেষ টিকে ছিল অনামিকায় দু'আনার আংটিটা
কাল বিকেলে তাও যে গেছে বিকিয়ে নজর পড়েনি কারোরই
এক কিলো তুলসি মালা, দুটো সোনালি মুরগী, আধ কিলো হাড় ছাড়া গোশতো, ছোলার ডাল, এক লিটার দুধ, এক ডজন হাঁসের ডিম, ঘি, চিনি, দামি মসলাপাতি, কিছু সবজি যে সে এনেছিল কিনে, কেউ আঁচও করেনি
আজকাল বিকল যন্ত্রগ্রস্তের মতো চাপা অসুখ ও বিপর্যস্ততায় দিন কাটে সবার এই ঘরে
গতকাল দুপুরে প্রিয়তম হাতটি যখন অন্য দিনের মতোই সজোরে চড় কষালো
ওরা কেউ কোন শব্দই করেনি
নিরব কোন বিক্ষোভের অস্তিত্বও নেই বেশ কিছুদিন
তবু বহুদিন পর সে রাঁধলো মনের সুখে
খাবার টেবিলে সাজালো একে একে
কম কম ঝাল, একটু মিষ্টি মিষ্টি স্বাদের
সুবাসিত তুলসী মালা পোলাও, শামি কাবাব, মুরগির কোরমা, হাঁসের ডিমের কালিয়া, পাঁচমেশালি সবজি, আস্ত পুডিং
বাচ্চা দুটোকে ডাকলো আদুরে নামগুলো ধরে তারপর
আহা...
সকাল থেকে ওদের বিষ্ময় ও আনন্দের সীমা নেই আজ
বরকেও ডাকলো সেই পুরোনো আহ্লাদী গলায়
বোন চায়নার ধবধবে থালায় বেড়ে দিলো একে একে প্রত্যেককে
ছোট মেয়েটিকে বললো আজ নিজের হাতেই যেন খেয়ে নেয়
তারপর
ধীর পায়ে হেঁটে গেল স্নানঘরে
দু'ফোঁটা অশ্রু গড়িয়েছে ভুল করে শুধু
কেউ দেখতে পায়নি
জলের তুখোড় শব্দে কেউ কিচ্ছু শুনতে পায়নি
ঝরনার নলটা বেশ মজবুত, পরখ করেছিল সে আগেই
একটু বেঁকে গেলেও ভেঙ্গে পড়েনি
জলের শব্দের মাঝেই এমন গভীর নিস্তব্ধতা নামতে পারে সে কি ভেবেছিল?
ভেবেছিল কি অন্যরাও?
ঘরময় তখনো পোলাও, কোরমা, কাবাব, কালিয়ার সুবাস ও উচ্ছাস
কম কম ঝাল, একটু মিষ্টি মিষ্টি
No comments:
Post a Comment